প্রতিটি সজীব কোষের প্রোটোপ্লাজম যে সূক্ষ্ম, স্থিতিস্থাপক, বৈষম্যভেদ্য, লিপোপ্রোটিন দ্বারা গঠিত সজীব দিস্তরী ঝিল্লি দিয়ে আবৃত থাকে তাকে প্লাজমা মেমব্রেন বা কোষঝিল্লি বলে।
অবস্থান:কোষ প্রাচীরের নিচে
কোষ ঝিল্লি মূলত সমস্ত প্রোটোপ্লাজম কে ঘিরে একটি সজীব ঝিল্লি।
অপর নাম: সাইটোমেমব্রেন ,প্লাজমালেমা , বায়ো মেমব্রেন।
(FUN FACT: Cyto মানে কোষ , Cyto কে ঘিরে রাখা মেমব্রেন সাইটোমেমব্রেন , অর্থাৎ কোষঝিল্লি )
নামকরণ এর প্যাচঁ : কার্ল নাগেলি ও ক্র্যামার (১৮৫৫)
- তবে বর্তমানে অনেকে একে বায়ো মেমব্রেন বলতে চান।
- Plower (১৯৩১) plasmalema শব্দটি ব্যবহার করেন।
পিনোসাইটিক ফোস্কা:
কোষঝিল্লিটি স্থানে স্থানে ভাঁজবিশিষ্ট হতে পারে প্রতিটি ভাঁজকে বলে মাইক্রোভিলাস
↓
কোষের ভিতরে অধিক প্রবিষ্ট মাইক্রোভিলাসকে বলে পিনোসাইটিক ফোস্কা।
প্রানিকোষে এসব ভালো দেখা যায় ।
প্লাজমামেমব্রেন এর গঠন সংক্রান্ত তিনটি মডেল:
১. স্যান্ডউইচ মডেল (১৯৩৫)
২.Unit Membrane Hypothesis (১৯৫৯)
৩. Fluid মোজাইক মডেল (১৯৩২) – সর্বজন স্বীকৃত মডেল
৩টি মডেল এর মধ্যে কমন বিষয় –
১. দ্বিস্তরী (Bilayer form)
২. ফসপোলিপিড
Special Note :
১। লিপিড → ফ্যাটি অ্যাসিড + গ্লিসারল
২। ফসফেট + লিপিড = ফসপোলিপিড
Sandwich Model :
বিজ্ঞানী Danielli ও Daveson ( 1935 ) সালে সর্বপ্রথম প্লাজমা মেমব্রেন এর একটি সুনির্দিষ্ট মডেল প্রস্তাব করেন , একে স্যান্ডউইচ মডেল বলা হয় ।
- এই মডেল অনুসারে কোষঝিল্লিটি দ্বিস্তরী ( Bilayer form) প্রতিস্তরে প্রোটিন এবং লিপিড নামক উপস্তর বিদ্যমান ।
- দ্বিস্তরী ঝিল্লিটির উপরে ও নিচে প্রোটিন স্তর মাঝখানে লিপিড স্তর।
UNIT MEMBRANE HYPOTHESIS :
বিজ্ঞানী Robertson (1959) প্লাজমামেমব্রেন এর UNIT MEMBRANE HYPOTHESIS প্রদান করেন । তার মতে biological সব মেমব্রেন এর আনবিক গঠন একই রকম । অর্থাৎ প্লাজমামেমব্রেন ফসফোলিপিড বাইলেয়ার দিয়ে গঠিত , যার স্থানে স্থানে প্রোটিন গ্রোথিত থাকে।স্থানে স্থানে গ্রোথিত প্রোটিন সহ ফসফলিপিড বাই লেয়ার কে ইউনিট মেমব্রেন বলে।
FLUID MOSAIC MODEL :
আমরা এখন FLUID MOSAIC মডেলটির বিভিন্ন অংশ নিয়ে আলোচনা করবো।
ফসফো লিপিড বাইলেয়ার :
- দুই স্তর বিশিষ্ট ফসফো লিপিড অণু দিয়ে তৈরি
- ফসফো লিপিড এ
1.একটি পোলার ফসফেট হেড
2.এক অণু গ্লিসারল হেড ও লেজের মাঝে
3.গ্লিসারল এর সাথে দুইটি নন পোলার ফ্যাটি এসিড লেজ থাকে
- ফসফো লিপিড এর মাথাগুলো পানিগ্রাহী বা হাইড্রোফিলিক ( ঝিল্লির ভেতরে ও বাইরে দুই সারিতে অবস্থান করে)
- ফসফো লিপিড এর লেজগুলো পানিবিদ্বেষী (পরস্পর মুখোমুখি অবস্থান)
মেমব্রেন প্রোটিন :
মেমব্রেনে অবস্থিত প্রোটিনই মেমব্রেন প্রোটিন । কোষঝিল্লিতে তিন ধরনের প্রোটিন শনাক্ত করা হয়েছে:
- ইন্টিগ্রাল প্রোটিন :ফসফোলিপিডের দুই স্তর জুড়ে অবস্থান করদে(ঝিল্লির উভয় সারফেসে থাকে)
- পেরিফেরাল প্রোটিন : দুই স্তরের যেকোনো এক প্রান্তে অবস্থান করে (প্রোটিন ঝিল্লির সারফেসে থাকে)
- লিপিড সম্পৃক্ত প্রোটিন বা অন্তর্নিহিত প্রোটিন : লিপিড করে সম্পৃক্ত থাকে।
গ্লাইকোক্যালিক্স:
এটি ঝিল্লির উপর চিনির বিশেষ স্তর।
ফসফলিপিড কার্বোহাইড্রেট শৃংখল (গ্লাইকোজেন ) =গ্লাইকো লিপিড
প্রোটিন +কার্বোহাইড্রেট শৃংখল = গ্লাইকো প্রোটিন
গ্লাইকো লিপিড + গ্লাইকো প্রোটিন= গ্লাইকোক্যালিক্স
★★ কার্বোহাইড্রেট শৃংখল গুলো সর্বদা ঝিল্লির বাইরে অবস্থান করে। কার্বোহাইড্রেট শৃংখল গুলোকে বলা হয় – Cell Surface Recognizer
কোলেস্টেরল :
ফসফো লিপিড অনুর মাঝে মাঝে কোলেস্টেরল অনু অবস্থান করে। প্রাণী কোষের ঝিল্লিতে এটি অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে।
Fluid মোজাইক মডেল নামকরনের কারণ:
ফসফো লিপিড অণুগুলো সব সময় সচল থাকে কাপে পরস্পরের সাথে ঢোকাঠুকি করে লাফিয়ে ওঠে এবং স্থান পরিবর্তন করে ঝিল্লিকে তখন তরল পদার্থের ন্যায় মনে হয় ।অন্যদিকে ঝিল্লিটিকে পৃষ্ঠতল হতে দেখলে প্রোটিন অনু গুলোকে মোজাইকের মতো দেখায় এ অবস্থাকে এক কথায় বোঝানোর জন্য ঝিল্লির মডেলকে নাম দেওয়া হয়েছে Fluid মোজাইক মডেল।
FLIP FLOP MOVEMENT :
লিপিড অণুগুলো তরল পদার্থের ন্যায় ঝিল্লির একই স্তরে স্থান পরিবর্তন করে , পাশে ব্যাপ্ত হয় এবং অক্ষ বরাবর ঘুরতে পারে । এটি FLIP FLOP MOVEMENT ।