সহজভাবে বলতে গেলে, অর্থ সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করাই হল অর্থায়ন। তুমি তোমার ব্যবসায় পরিচালনা করতে কি পরিমান মূলধন প্রয়োজন, কোন কোন উৎস থেকে সেই মূলধন সংগ্রহ করবে এবং কিভাবে বিনিয়োগ করলে ব্যবসায়ের মুনাফা সবচেয়ে বেশি হবে– সে সকল বিষয়ে যে পরিকল্পনা প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন করবে তাকেই বলা হয় অর্থায়ন। অর্থাৎ অর্থ বা মূলধন সংগ্রহ, বিনিয়োগ এবং নিয়ন্ত্রন প্রক্রিয়াকে একত্রে অর্থায়ন বলে। এই অর্থই হচ্ছে ব্যবসায়ের জীবনীশক্তি।
এবার এসো আমরা জেনে নেই অর্থায়ন কত প্রকার এবং সেগুলো কিভাবে কাজ করে।
অর্থায়ন এর প্রকারভেদঃ
ক)পারিবারিক অর্থায়নঃ তোমার পরিবারে অবশ্যই আয় ও ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করা আছে। এখন পরিবারের আয়ের উৎস ও পরিমান নির্ধারণ করে সেই আয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিভাবে ব্যয় করলে তোমার ও পরিবারের বাকিদের চাহিদা পূরণ হবে এই বিষয়টিকে বলা হয় পারিবারিক অর্থায়ন।
খ) সরকারি অর্থায়নঃ এই অর্থায়ন প্রক্রিয়ায় প্রথমে ব্যয়ের খাত ও পরিমান নির্ধারন করা হয়। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করা হয়। সরকারি অর্থায়নের মূল লক্ষ্য জনকল্যাণ।
গ) অব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নঃ তোমার আশেপাশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা আছে যারা কাজ করে মানবকল্যাণ বা দরিদ্র ও বঞ্চিতদের সেবা করার জন্য। মুনাফা অজনের উদেশ্য নিয়ে নয়। এরকম অব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের যেমনঃ স্কুল, হাসপাতাল, এতিমখানা ইত্যাদি তহবিল সংগ্রহ ও সুষ্ঠ ব্যবহার করাকে বলা হয় অব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়ন।
ঘ) ব্যবসায় অর্থায়নঃ ব্যবসায় অর্থায়ন বলতে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে কী পরিমাণ মূলধনের প্রয়োজন, কোন কোন উৎস হতে তা সংগ্রহ করা হবে এবং কোন কোন খাতে তা বিনিয়োগ করা হবে তাকে বুঝায়। অর্থায়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বরূপ বা ধরন হচ্ছে ব্যবসায় অর্থায়ন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বলতে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে লাভ–ক্ষতির ঝুঁকি নিয়ে গঠিত সংগঠনকে বুঝায় । ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার তহবিল সংগ্রহ ও বিনিয়োগের জন্য যে অর্থায়ন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে, তাকে ব্যবসায় অর্থায়ন বলে।
ঙ) আন্তর্জাতিক অর্থায়নঃ আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বলতে একটি দেশের আমদানি ও রপ্তানি, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার ইত্যাদি বিষয় আলোচনাকে বুঝায়। একটি দেশে যখন রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হয় তখন সেই দেশে বানিজ্য ঘাটতি দেখা যায়। আবার এই বানিজ্য ঘাটতি পুরনে সহায়তা করে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স। আন্তর্জাতিক অর্থায়নে আমদানি ও রপ্তানি খাতসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং এই বাণিজ্য ঘাটতি কীভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।